❑ অনেকে IBA (Institute of Business Administration)- সম্পর্কে জানতে চেয়েছো। তাদের জন্যই মূলত এই পোস্ট।
❑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-এর পাশাপাশি JU, RU এবং আর্মি পরিচালিত একটি Army IBA আছে বাংলাদেশে। আমি Dhaka University-এর IBA নিয়ে লিখবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র বিবিএ ডিগ্রি বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানজনক ডিগ্রিগুলোর মধ্যে একটি। এই স্বপ্নপূরণের পথে কীভাবে প্রস্তুতি নেবে, কী কী করণীয় সে ব্যাপারে তোমাদের মনে যত প্রশ্ন রয়েছে, এই লেখাটির মাধ্যমে তার সবগুলোর উত্তর পেয়ে যাবে।
❑ তুমি যেকোন গ্রুপ থেকেই পড়াশোনা করো না কেন, (সায়েন্স/আর্টস/কমার্স) এইচএসসি (মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে আলিম) পাশ করার পরে বিবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। বাংলা মিডিয়াম, ইংলিশ মিডিয়াম, মাদ্রাসা- কোন ভেদাভেদ নেই, সবাই পারবে পরীক্ষা দিতে।
❑ ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতে জিপিএ কত লাগবে?
অনেকে মনে করো যে এসএসসি, এইচএসসিতে গোল্ডেন থাকা লাগবে বা ইংরেজিতে এ প্লাস থাকতে হবে। এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। আইবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে তোমার এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় মিলিয়ে মোট জিপিএ ৭.৫ থাকলেই যথেষ্ট (চতুর্থ বিষয় সহ)।স্পেসিফিক সাব্জেক্টের গ্রেড কোন প্রভাব ফেলবে নাহ। মানে ইংলিশে অমুক গ্রেডের কম, ম্যাথে অমুক গ্রেডের কম থাকলেও কোন সমস্যা নাই।
❑ জিপিএর উপর ভিত্তি করে পয়েন্ট ঠিক করা হয়।
এসএসসিতে তোমার জিপিএ ৪.৫ হলে পাবে ৩ পয়েন্ট, আর ৩.৫ জিপিএ হলে পাবে ২ পয়েন্ট।
এইচএসসিতে জিপিএ ৪ হলে পাবে ৩ পয়েন্ট, এবং জিপিএ ৩ হলে ২ পয়েন্ট।
এই পয়েন্টগুলো যোগ করে মোট ৫ পয়েন্ট পেলেই তুমি যোগ্য পরীক্ষা দেওয়ার জন্য।
❑ আইবিএতে কি শুধু ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরাই পড়ে?
এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। আগেই বলেছি, এখানে বাংলা-ইংরেজি-মাদ্রাসা কোন মাধ্যমের ভেদাভেদ নেই। তুমি যে মাধ্যমেই পড়াশোনা করো না কেন, যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই সুযোগ পাবে আইবিএতে।
একটি মজার তথ্য জেনে অবাক হবে, সাধারনত আইবিএতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিবছর উত্তীর্ণদের ভেতর ইংলিশ মিডিয়ামের চেয়ে বাংলা মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি থাকে! সুতরাং, তোমার ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।
❑ ভর্তিযুদ্ধে কত পরীক্ষার্থী অংশ নেয়? উত্তীর্ণ হয় কতজন?
প্রতিবছর গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয় আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায়। সেখান থেকে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় ১৮০ জন, তাদেরকে একটি চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে বাছাই হয় ভাগ্যবান ১২০ জন শিক্ষার্থী।
❑ এত এত পরীক্ষার্থীদের মাঝে আমি কি পারবো?
প্রথমেই জেনে রেখো, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক হলেও সত্যিকারের প্রতিযোগিতায় আসার যোগ্যতা থাকে খুব কম শিক্ষার্থীরই। যেহেতু আইবিএ-র ভর্তি পরীক্ষা বছরের শেষদিকে হয়, এর আগেই মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং সহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলো সমাপ্ত হয়ে যায়। অনেকেই তাই কৌতূহল বা শখের বশে পরীক্ষা দিতে আসে যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া।
❑ তোমার সত্যিকারের প্রতিযোগিতা হবে মাত্র ১০-১৫% পরীক্ষার্থীর সাথে। সুতরাং এত পরীক্ষার্থী দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই।
❑ ভর্তি পরীক্ষা কখন অনুষ্ঠিত হয়? সার্কুলার কখন ছাড়ে?
সাধারনত অক্টোবরের একদম শুরুতেই ফর্ম ছাড়া হয় ওয়েবসাইটে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরুর সাত সপ্তাহের ভেতর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত অক্টোবরের একদম শেষে বা নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষা (এটি fixed নয়, বছরভেদে আগে পরে হতে পারে)।
এ তো গেল ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য। সব জানার পর যদি লক্ষ্য স্থির করো আইবিএতেই পড়তে চাও, চলো তবে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নেবে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি।
❑ আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষার পাঠ্যসূচি কী?
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোন ধরাবাঁধা পাঠ্যসূচি বা সিলেবাস নেই। যেহেতু কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই, সুতরাং শতভাগ প্রস্তুতি নেওয়া কারো পক্ষেই সম্ভব না। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, অনুশীলনের বিকল্প কিছু নেই। তুমি যা পড়বে এর ৪০% হয়তো মনে থাকবে না, সেটা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। এই ৬০% কে পুঁজি করেই বিজয়ের নিশান উড়িয়ে দিতে পারবে তুমি। সুতরাং “কী কী পড়বে” তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ “কী কী বাদ দিয়ে পড়বে”।
❑ আমাকে কি ইংরেজি ও গণিতে অসাধারন দক্ষ হতে হবে?
আমরা অনেকেই আছি, যাদের ইংরেজির ভিত্তি তেমন শক্ত নয় অথবা গণিতে দুর্বল। তাদের জন্য কাজটি কঠিন নিঃসন্দেহে, কিন্তু যতই দুর্বল হওনা কেন, কঠোর পরিশ্রম করলে তুমি অবশ্যই উত্তীর্ণ হবে।
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে সাধারণত IQ based (বুদ্ধির পরীক্ষা) প্রশ্ন থাকে, মাধ্যমিক পর্যায়ের অঙ্ক থাকে বেশিরভাগ। ইংরেজিতে বেসিক গ্রামারের খুঁটিনাটি জানা থাকতে হয় ভালভাবে, সাথে ভোক্যাবুলারি রয়েছে। সুতরাং ইংরেজি/গণিত এগুলো নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনুশীলনের মাধ্যমে সব আয়ত্তে আনা অবশ্যই সম্ভব।
❑ BBA(IBA)-তে কি কি ধরনের প্রশ্ন থাকে?
MCQ
Written
VIVA
প্রশ্নের মানবণ্টন
লিখিত পরীক্ষা দুটি পর্যায়ে হয়। নৈর্ব্যক্তিক এবং লিখিত।
নৈর্ব্যক্তিক অংশ
নৈর্ব্যক্তিক (M.C.Q) পরীক্ষার সময় ৯০ মিনিট। এতে তিনটি অংশ থাকে – ইংরেজি (৩০ মার্কস), গণিত (৩০ মার্কস), এনালিটিকাল (বিশ্লেষণী) (১৫ মার্কস)।
তোমাকে ইংরেজি, গণিত, এনালিটিকাল প্রত্যেকটি অংশ আলাদা আলাদাভাবে পাশ করতে হবে।
বেশিরভাগ অংশে ফুল মার্কস পেয়েও কোন একটি অংশেও যদি ফেল করো তাহলে তুমি অনুত্তীর্ণ।
❑ প্রত্যেকটি অংশে Passing Mark (পাশ মার্ক) কতো?
এটি বছরভেদে বা প্রশ্ন কতো কঠিন বা সহজ হয় তার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি অংশে Passing Mark 60%।
অর্থাৎ ইংরেজি ও গণিতে তোমাকে কমপক্ষে ১৮ মার্কস এবং এনালিটিকালে কমপক্ষে ৯ মার্কস পেতে হবে।
❑ নেগেটিভ মার্কিং কতো? ক্যালকুলেটর কি আনা যাবে?
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কাটা যাবে। সুতরাং একদম নিশ্চিত না হয়ে উত্তর করবে না। আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর কখনোই অনুমোদিত নয়।
❑ IBA(BBA)-এর জন্য কোন প্রশ্নব্যাংক ভালো হবে?
লাস্ট ২৮টি IBA(BBA) ব্যাচের প্রশ্ন অবশ্যই তোমাকে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে আমি তোমাদের NEXUS IBA(BBA) Admission Guide রেফার করবো কারন তুমি এই গাইডটিতে IBA (BBA) ভর্তি পরীক্ষার ১ম ব্যাচ থেকে সর্বশেষ ব্যাচের MCQ, Written প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ পাবে। পাশাপাশি রিয়েল VIVA প্রশ্ন ও সমাধান পাবা। এছাড়াও JU-IBA (BBA), Army IBA (BBA), RU-IBA (BBA) ও BUP-BBA-এর বিগত বছরের প্রশ্ন ও ব্যাখ্যাসহ সমাধান পাবা। যেগুলো অন্য ভর্তি গাইড বা প্রশ্নব্যাংকে পাবে না। বেশিরভাগ প্রশ্নব্যাংকেই IBA (BBA)-এর প্রথম ব্যাচ থেকে ৯ম ব্যাচের প্রশ্ন দেওয়া নেই। আর এই ৯বছরের প্রশ্নগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে NEXUS IBA(BBA) Admission Guide-টিতে ১ম থেকে সর্বশেষ ২৮টি IBA(BBA) ব্যাচের প্রশ্নই ব্যাখ্যাসহ দেওয়া রয়েছে তাই আমি বলব NEXUS IBA(BBA) Admission Guide বেস্ট হবে। বাকিটা তোমার ইচ্ছা।
❑ MCQ-তে কোন কোন বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয়?
English
Analytical Ability
❑ English(30 marks): English MCQ-এর প্রশ্নগুলো কি ধরনের?
❑ English MCQ-এর জন্য কোন বই ফলো করবো?
১. Barron’s Toefl
২. Cliffs Toefl
৩. NEXUS English Q Bank (এটা মাস্ট লাগবে কারন বইটি DU IBA (BBA), IBA(MBA), Evening MBA, BCS, Barron’s Toefl, Cliff’s Toefl, Barron’s GMAT, DU-B, C & D Unit-এর বিগত বছরের ইংরেজি প্রশ্ন নিয়ে বইটি তৈরি করা হয়েছে। আশাকরি ইংরেজীতে হুবুহু প্রশ্ন কমন পাবে। বইটিতে ৯০০০+ প্রশ্ন রয়েছে সহজে বুঝার জন্য প্রতিটি প্রশ্নের নিচে ব্যাখ্যা করে দেওয়া হয়েছে। এই বইটি শেষ করতে পারলে যেকোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ইংরেজি প্রস্তুতি ১০০% হয়ে যাবে।এই বইটি থেকে বিগত বছরের ঢাবি IBA ভর্তি পরীক্ষায় প্রচুর প্রশ্ন হুবুহু কমন ছিল।
৪. Saifurs Vocabulary অথবা NEXUS Vocabulary (তবে আমার কাছে নেক্সাস বেস্ট মনে হয়েছে কারন এখানে Words Smart, Barron’s GRE, Barron’s SAT, Bank Job, BIBM, IBA-MBA এর ভোকাবুলারি প্রশ্ন ও অর্থ দেওয়া আছে। যেগুলো IBA (BBA) ভর্তি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ)
❑ Math-এর প্রশ্নগুলো কি ধরনের?
Math(30 marks): Math সাধারণত ক্লাস ৯-১০ এর basic Geometry, Algebra, Arithmetic, Trigonometry থেকে আসে। এখানেও SAT, GMAT এর প্যাটার্ন ফলো করা হয়। বাট প্রশ্ন হবে ইংরেজি তে। এটুক খেয়াল রেখ।
টপিকস গুলো এরকম:
*সংখ্যা পদ্ধতি, ভগ্নাংশ, উৎপাদক
*মৌলিক সংখ্যা, লসাগু, গসাগু
*নাম্বার লাইন, প্রকৃত-অপ্রকৃত সংখ্যা
*সূচক (বর্গ, ঘন, বর্গমূল, ঘনমূল)
*গড়
*শতকরা
*সুদকষা
*বয়স
*লাভক্ষতি
*অনুপাত সমানুপাত
*সময়, গতিবেগ, দূরত্ব
*সময় ও কাজ
*সেট
*মিশ্রন
*ট্রেন ও নৌকার গতিবেগ
*ধারা
*বীজগাণিতিক সূত্রাবলীর প্রয়োগ
*বীজগণিতিয় রাশিমালা
*মান নির্ণয়
*সমীকরণ
*অসমতা (<, >)
*কোণ, রশ্মি
*ত্রিভূজ
*চতুর্ভুজ
*বৃত্ত
*ক্ষেত্রফল বিষয়ক সমস্যা
*ঘন জ্যামিতি
*লেখচিত্র
❑ ম্যাথের জন্য কোন বই ফলো করবো?
Competitive Math Analysis বইতে এই সব টপিকস সুন্দর আলোচনা করা আছে। এসব টপিকের Rules গুলা পড়তে হবে, পাশা পাশি ওই টপিকের ম্যাথ প্রাকটিস করতে হবে। বইটি ফলো করলেই শতভাগ প্রস্তুতি হয়ে যাবে।
আর প্রিভিয়াস ২৮টি BBA ব্যাচের কোশ্চেন সলভ করতে হবে।
❑ Analytical-এর প্রশ্নগুলো কি ধরনের?
Analytical Ability (15 marks): কোশ্চেন কেমন বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন, বই থেকে সরাসরি দেখলে ভালো বুঝবা। এই পার্ট টা আসলে যত কঠিন শোনায় তত না।
Main topics:
Critical Reasoning (2/3 marks)
Puzzle (10 marks)
Data Sufficiency (2/3 marks)
❑ Analytical Ability-এর জন্য কোন বই ফলো করবো?
আর হ্যা, এখানেও প্রিভিয়াস কোশ্চেন গুলা পড়া উচিৎ। আর প্রিভিয়াস ২৮টি BBA ব্যাচের কোশ্চেন সলভ করতে হবে সাথে GRE Big Boo
GRE Big Book (2ndhandbajar.com) ফলো করলেই হবে।আর “IQ Analysis” নামে একটা বই রয়েছে ওটা সাথে রাখতে পারো।❑ Written (25 marks): লিখিত অংশ (৩০ মিনিট)
তোমাকে খুব চমৎকার ইংরেজি লিখতে জানতে হবে বা সাহিত্য করতে হবে এমন কোন কথা নেই। যেগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে-
হাতের লেখা পরিষ্কার ও গুছানো হতে হবে।
কোনরকম বানান ভুল করা যাবে না।
বাক্যের গঠনে বিন্দুমাত্র গ্রামাটিক্যাল Error যেন না হয়।
অনর্থক লেখা বড় না করে কম কথায় মূল বক্তব্য সাজিয়ে তুলে ধরতে হবে।
Written এ কি কি থাকে?
Essay Writing/Paragraph Writing/Translation/Summary Writing/Thematic Writing etc
সাধারণত বাংলায় একটা অনুচ্ছেদ ৫ মার্কস।(কিছু নিয়া এক প্যারা লিখা লাগবে বাংলায়)
English এ একটা paragraph ১০ মার্কস। (কিছু একটা নিয়া এক প্যারা লিখা লাগবে ইংরেজি তে)
English এ আরেকটা comprehension/critical writing.
(এখনে কোন একটা ব্যাপার এ মতামত চাওয়া হয়, আলোচনা করতে বলা হয়)
পরীক্ষার হলে যা যা অবশ্যই মাথায় রাখবে
লিখিত পরীক্ষার আলোচনা শেষ হলো। তোমরা যারা এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তাদের আরেকটি বাধা পেরোতে হবে – মৌখিক পরীক্ষা। এখান থেকে ঝরে যাবে আরো ৬০ জন! এতদূর পথ পাড়ি দিয়ে এই পরীক্ষায় বাদ পড়ে যাওয়ার কষ্ট সহ্য করার মতো নয়। তাই মৌখিক পরীক্ষা সম্পর্কেও জানতে হবে ভালভাবে।
❑ Written-এর জন্য কোন বই ফলো করবো?
IBA (BBA) Written প্রস্তুতির জন্য “NEXUS English Written + MCQ” একটি বই রয়েছে, যেটি মূলত IBA Written + MCQ প্রশ্ন Pattern Follow করেই তৈরি করা। সাথে Varsity Written Analysis নামে আর একটি বই রয়েছে যেটি মূলত ঢাবি গ ইউনিট ও IBA Written Pattern Follow করে তৈরি। এই দুটো বই ফলো করলেই Written প্রস্তুতি শতভাগ হয়ে যাবে।
আইবিএ-র প্রশ্ন ক্লাস এইটের শিক্ষার্থীও সলভ করতে পারবে, তুমি সলভ করতে পারছো কিনা তা দিয়ে কিচ্ছু আসে যায় না। কত তাড়াতাড়ি সলভ করতে পারছো সেটি আসল বিষয়। Time Constraint এর ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। বাসায় হাজার হাজারবার অনুশীলন করো প্রত্যেকটি ম্যাথ, পাজল যেন পরীক্ষার হলে দেখামাত্র মুখে মুখে সলভ করে ফেলতে পারো।
Time Management এর আরো একটি টিপস – প্রস্তুতি নেয়া বড় কথা নয়, প্রস্তুতিকে ঠিকভাবে কাজে লাগানোই সাফল্য। তোমাকে প্রত্যেকটা Segment-এ আলাদা আলাদাভাবে পাস করতে হবে। কাজেই তুমি যা পারো, শুধু সেটা নিয়েই পড়ে থাকবে না। সময়টাকে ভাগ করে নিবে, পুরো সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ে যা যা পারো, সেগুলো ঝটপট উত্তর করে ফেলবে। বাকি সময় যেটুকু থাকে তখন অন্য প্রশ্নগুলো সলভ করার চেষ্টা করবে।
বাসায় প্রতিদিন বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর উপর নিজে নিজে মডেল টেস্ট দিয়ে Time Management অনুশীলন করবে। শেষ একমাস কোন Study break নেই। কঠোর রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হবে।
ভেবেচিন্তে উত্তর দাও:
আগেই বলেছি প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ মার্কস কাটা যাবে। সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা চিন্তাও করবে না। তোমাকে সব পারতে হবে এটা ভাবার প্রশ্নই আসে না।
যেগুলোর উত্তর তুমি একদম নিশ্চিত সেগুলো আগে দাগাও, পাসিং মার্ক অতিক্রম করতে পারলেই নিশ্চিত থাকো তুমি সফল হবে। ৬০% মার্কস পেয়েও বহু পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়, অথচ ৯০% মার্কস পেয়েও নেগেটিভ মার্কিং এর জন্য কোন একটি সেকশনে পাসিং মার্ক পেরোতে না পারায় ফেল আসে অনেকের।
সারপ্রাইজের জন্য প্রস্তুত থাকো । এমন অনেক প্রশ্ন আসতে পারে পরীক্ষায় যেগুলো আসার কথা তুমি কল্পনাও করোনি।
STAY COOL! মাথা ঠাণ্ডা রাখো! ৯০% পরীক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হয় কেবল এই একটি কারণে। প্রশ্ন সলভ করতে সবাই পারে কিন্তু পরীক্ষার হলে মাথা গরম করে ফেললে সব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যাবে তোমার।
BE A WINNER! পরীক্ষার হলে ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই টেনশন আর ভয়কে প্রশ্রয় দিলে একদম সর্বনাশ হয়ে যাবে। মনে একটাই বিশ্বাস রাখবে – “WHO AM I? I AM A CHAMPION!”
শুধু আত্মবিশ্বাসের জোরেই দেখবে পরীক্ষা অনেক ভাল হবে।
তোমার বুকে ১০০% বিশ্বাস থাকতে হবে তুমি আইবিএতে চান্স পাওয়ার যোগ্য
সুন্দর ফরমাল ড্রেস পরে যাবে ভাইভাতে। ফুলহাতা শার্ট, প্যান্ট, সাথে স্যুট পরতে পারো। জুতো একদম পরিষ্কার যেন হয়। চুল আঁচড়ানো হবে। মেয়েদের জন্যও ভাইভা বোর্ডের ভাবগাম্ভীর্য অনুযায়ী যথাযথ পোষাক বাঞ্ছনীয়। তোমাকে দেখে যেন বিনীত এবং মার্জিত রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।
তোমার চলনে বলনে আত্মবিশ্বাসের ছাপ থাকতে হবে। ভাইভা বোর্ডে অনেকভাবে তোমাকে নার্ভাস করার চেষ্টা করা হবে, আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না।
আত্মবিশ্বাস তো থাকতেই হবে, কিন্তু তাই বলে ওভার কনফিডেন্ট হলে চলবে না। বেয়াদবি বা Inappropriate কথা-বার্তা, আচরণ ভুলেও করা যাবে না ভাইভা বোর্ডে।
ভাইভার প্রস্তুতির জন্য আলাদা করে কিছু পড়তে হবে না। সাধারন জ্ঞান, এসএসসি এইচএসসি থেকে কোন পড়া ধরা হয়না সাধারনত ভাইভাতে।
অনেকেই আছে ইংরেজিতে কথা বলায় ফ্লুয়েন্ট না। এটা নিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। কমন কিছু প্রশ্ন-
তোমার পরিবারে কে কী করেন, কোথায় পড়াশোনা করেছো, কেন আইবিএতে পড়তে চাও, ক্যারিয়ার হিসেবে কোন পথ বেছে নিবে, তোমার জীবনের স্বপ্ন কী ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর সুন্দর করে গুছিয়ে বলার অনুশীলন করবে। ভাইভা বোর্ডে পারো আর না পারো, ইংরেজি বলে যাবে। ইংরেজির জন্য কাউকে থামিয়ে রাখা যায়না। Accent নিয়ে চিন্তাও করবে না, accent কেউ দেখেনা, ইংরেজি বলতে পারলেই হলো। সর্বশেষ NEXUS IBA(BBA) Admission Guide-এ কিছু রিয়েল ভাইভা প্রশ্ন দেওয়া আছে দেখে নিবা।
ভাইভা বোর্ডে মূলত যাচাই করা হয় তোমার উপস্থিত বুদ্ধি, আচরণে মার্জিত বিনীত মনোভাব, আন্তরিকতা, আত্মবিশ্বাস, স্মার্টভাবে পরিস্থিতি সামলানোর ও মাথা ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতা।
★★ Referred books:
* ১ম ব্যাচ থেকে সর্বশেষ IBA(BBA) ব্যাচের প্রশ্নের ব্যাখ্যাসহ যেকোন একটি প্রশ্নব্যাংক [বেশিরভাগ প্রশ্নব্যাংকেই IBA (BBA)-এর প্রথম ব্যাচ থেকে ৯ম ব্যাচের প্রশ্ন দেওয়া নেই। আর এই ৯বছরের প্রশ্নগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে NEXUS IBA(BBA) Admission Guide-টিতে ১ম থেকে সর্বশেষ ২৮টি IBA(BBA) ব্যাচের প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ দেওয়া রয়েছে।]
* Cliff's/Barron's TOEFL
* NEXUS English Written + MCQ
* Competitive Math Analysis
* IQ Analysis
* NEXUS English Q Bank
* GRE big book
* NEXUS Vocabulary
* Varsity Written Analysis (C-Unit & IBA)
উপরের বইগুলো শেষ করতে পারলে নিচের বইগুলো সহায়ক বই হিসেবে দেখতে পারো। তবে উপরের বইগুলো ১০০% শেষ করতে পারলেই কেবল এই বইগুলো ফলো করবা-
1. Official GMAT
2. Words Smart
শেষকথা
আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আমি যেমন আইবিএ এবং বিইউপি ছাড়া অন্য কোথাও পরীক্ষাই দেইনি। তোমার বুকে ১০০% বিশ্বাস থাকতে হবে তুমি আইবিএতে চান্স পাওয়ার যোগ্য।
প্রস্তুতিতে কোন অবহেলা করা যাবে না। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝে ঈদ, পূজোর ছুটি যাবে, এগুলোর উদযাপনে একটা ঘণ্টাও যেন নষ্ট না হয়। ঘুম, আড্ডাবাজি, ফেসবুকিং, সব বন্ধ এই কয় মাস। ভর্তি পরীক্ষার এই কয়টি দিন তুমি কতটুকু পরিশ্রম করছো তার উপর নির্ভর করবে তোমার বাকি জীবনের পথচলা।
ঢাবির আইবিএ বিবিএর প্রস্তুতি নিলে একসাথে যা যা কভার করবে
ঢাবির আইবিএ বিবিএ (আসন ১২০ টি)
১। জাবির আইবিএ (বিবিএ আসন-৬০টি)
২। বিইউপির বিবিএ (*আসন ৫০০ টি)
৩। খুবির বিবিএ
৪। রাবির আইবিএ (বিবিএ)
৫। সাস্ট এর বিবিএ
৬। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বিবিএ (ব্রাক, নর্থসাউথ, আইইউবি প্রভৃতি)
৭। আর্মি আইবিএর বিবিএ
৮।এমনকি এইচএসসির পর বাংলাদেশ নেভি, আর্মি, বিমান প্রভৃতির ক্যাডেট নিয়োগের পরীক্ষা
এগুলোর প্রস্তুতি প্রায় পুরোপুরি কভার করবে। + ঢাবিসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ইউনিট (খ, গ, ঘ) এর ইংরেজি অংশ, এবং যেসব বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ম্যাথ আসে যেমন-জাবি, জবি প্রভৃতির ম্যাথ অংশও কভার করবে।
.
সুতরাং সাহস নিয়ে এগিয়ে চলার সময় এখনই।
স্বপ্নের আইবিএতে পড়ার লক্ষ্য পূরণ হোক সবার। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-ই নয়, তুমি যদি এই লেখা অনুসারে প্রস্তুতি নাও তাহলে বিইউপি, জাহাঙ্গীরনগর, নর্থ সাউথ সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিবিএ পরীক্ষাতেও অনেক ভাল করবে।